সাংবাদিকতা পেশা হিসেবেই চ্যালেঞ্জিং

সাংবাদিকতা পেশা হিসেবেই চ্যালেঞ্জিং

সাংবাদিকতা পেশা হিসেবেই চ্যালেঞ্জিং। তবে নারীদের জন্য এ পেশায়ও বাধাবিপত্তি ‘দ্বিগুণ’। তবে গত দুই দশকে চিত্রটা যেভাবে বদলাচ্ছে, এতে প্রথিতযশা সাংবাদিক আইরীন নিয়াজী মান্না আশাবাদী, একদিন কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসবেই। সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির (সিডব্লিউইউ) জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে মুখ্য বক্তা হিসেবে আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় ‘সাংবাদিকতায় নারীদের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শিরোনামের অনলাইন সেমিনারটি সিডব্লিউইউ এবং দীপ্ত টিভির ফেসবুক নীড়পাতায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। জুম মাধ্যমে এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন সিডব্লিউইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান, রেজিস্ট্রার ইলিয়াস আহমেদ, সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মালেকা বেগম, বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক হাসান শিরাজী, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ (জেএমএস) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারপারসন সজীব সরকার ও একই বিভাগের শিক্ষক শিক্ষক হাসিনুস সাবাহ।

পার্শ্ব আলোচক হিসেবে ওয়েবিনারে অংশ নেন দৈনিক আমাদের সময়ের সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সুর ও মাজেদুল হক তানভীর। ওয়েবিনারটি উপস্থাপনা করেন জেএমএস শিক্ষক মাহমুদা কণা।

স্বাগত বক্তব্যে উপাচার্য পারভীন হাসান বলেন, ‘নারীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তো এখন সব জায়গায়, সব ক্ষেত্রেই প্রচুর চ্যালেঞ্জ। আর যেখানেই চ্যালেঞ্জ আছে, তার মানে, বুঝতে হবে, সেখানে সম্ভাবনাও অনেক। সম্ভাবনার দ্বারগুলো খুলে দিতে হবে। অধ্যাপক পারভীন হাসান মনে করেন, নারীরা পেশাগত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেই সামনে এগিয়ে যাবেন।’

বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ড. মালেকা বেগম বলেন, ‘শুধু আমাদের যে পরিবেশ-শুধু পারিবারিক নয়, সামাজিক যে পরিবেশ- সে কারণেই নারীদের শুধু সাংবাদিকতা নয়, সব প্রাতিষ্ঠানিক কাজে সমস্যায় পড়তে হয়।’

সিডব্লিউইউ’র রেজিস্ট্রার ইলিয়াস আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা পেশায় নারীদের অংশগ্রহণকে পরিবার থেকেই উৎসাহিত করা হয়, যেখানে নিরাপত্তার প্রশ্নে দিন-রাতের বিতর্ক নেই বললেই চলে। কিন্তু সাংবাদিকতা পেশায় নারীদের ব্যাপারে পরিবারগুলোর আপত্তির কারণ কী?’ একটি গবেষণাপ্রবন্ধের সূত্রে তিনি বলেন, এ পেশায় যৌন হয়রানির ঘটনা ‘বেশি মাত্রা’য় রয়েছে বলেই হয়তো এমন আপত্তি।’

সিডব্লিউইউ’র জেএমএস’র চেয়ারপারসন সজীব সরকার বলেন, ‘পরিবারে পুরুষকে সমান দায়িত্ব নিতে হবে; সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, গণমাধ্যম-মালিকদেরও কর্তব্য পালনে শতভাগ ন্যায় হতে হবে; নজরদারি থাকতে হবে সরকারের তরফেও।’

অধ্যাপক হাসান শিরাজী মনে করেন, ‘অনলাইন পত্রিকায় বিজ্ঞাপনদাতাদের যে অনাস্থা, তা কাটিয়ে ওঠার জন্য বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে হবে। আর এভাবে অনলাইন মিডিয়াসহ সব গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন নিশ্চিত করতে পারলে নারীদের চাকরির স্থায়ীত্ব বাড়বে।’

সাংবাদিকতায় প্রযুক্তি কীভাবে নারীদের জন্য সম্ভাবনাময় হয়ে উঠতে পারে, অধ্যাপক শাহনাজ পারভীন সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারীদের সংবাদিকদের নিরাপত্তা বাড়ানো সম্ভব। নতুন প্রযুক্তিতে কাজে লাগিয়ে নারীরা সাংবাদিকতায় আরও এগিয়ে যেতে পারবে।’

এ সময় পেশাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিতে দক্ষ হওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন হাসিনুস সাবাহ।

মাজেদুল হক তানভীর নারীদের জন্য অনলাইন মাধ্যমে কাজের সুবিধার কথা তুলে ধরেন। জাহাঙ্গীর সুর মনে করেন, সমাজের যে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, সেটা বদলানোই বেশি জরুরি।